Home / Blog
বাংলাদেশে হাজারো তরুণ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখছে, কিন্তু সকলে যে সফল হয় তা নয়। প্রশ্ন হলো—কেন? বিষয়টা দক্ষতার ঘাটতির চেয়ে বেশি মানসিকতা, শৃঙ্খলা আর ধারাবাহিকতায় আটকে থাকে।
যেমন ধরুন, রাফিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সে বুঝেছিল—চাকরি পাওয়া অনিশ্চিত, কিন্তু সময় অপচয় করলে ক্ষতি তারই। সে প্রতিদিন মাত্র ২ ঘণ্টা সময় দিত। প্রথম ২০ দিন শুধু HTML। এরপর CSS। তারপর Responsive Design। অগণিত ছোট ছোট ল্যান্ডিং পেজ বানাতে বানাতে একসময় তার হাত এতটাই পাকা হয়ে গেল যে দেখতে সুন্দর, মোবাইল-ফ্রেন্ডলি সাইট বানানো তার কাছে সহজ মনে হলো।
এটাই মূল রহস্য—ছোট প্রজেক্ট তৈরি করতে করতে স্কিল অটোমেটিক্যালি উন্নত হয়।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোনো কাগজে পড়ার বিষয় নয়; এটি ১০০% প্র্যাকটিক্যাল।
বাংলাদেশে ওয়েবসাইট মানেই অনেক ক্ষেত্রে WordPress।
কেন?
১. খরচ কম
২. দ্রুত ওয়েবসাইট তৈরি
৩. সহজে কাস্টমাইজ
৪. Elementor, Divi-এর মতো ভিজ্যুয়াল বিল্ডার
বাংলাদেশের ছোট ব্যবসা, দোকান, রেস্টুরেন্ট, পার্সোনাল ব্র্যান্ড, কোচিং সেন্টার—সবাই WordPress সাইট বানায়।
একটি সাধারণ WordPress ওয়েবসাইট—
১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকায় অনায়াসে বিক্রি করা যায়।
এক মাসে ৩–৫টি প্রজেক্ট নিলেই আয় ৪৫,০০০—১ লাখ টাকা।
এজন্য অনেক ডেভেলপার Fiverr-এর পাশাপাশি লোকাল মার্কেট ধরে।
Web development earnings তখন দ্বিগুণ হয়ে যায়—লোকাল + বিদেশি।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বড় ভুল—
“শুরুতেই বড় দাম চাই।”
যারা শুরুতেই ২০০ ডলারের প্রজেক্ট খোঁজে, তারা প্রথম ২ মাস কিছুই পায় না।
অন্যদিকে যারা ৩০–৫০ ডলারের ছোট কাজ শুরু করে, তারাই দ্রুত রেটিং জমায় এবং ৩ মাস পর বড় কাজ পেতে শুরু করে।
উদাহরণ:
একজন বাংলাদেশি নতুন ডেভেলপার একটি ছোট Bug Fix কাজ ১৫–২০ ডলারে পায়। ৫ তারকা রিভিউ পেলে সে পরের সপ্তাহেই ৫০–১০০ ডলার দামের কাজ পায়।
এটাই বাস্তব।
আপনি যত দ্রুত রেটিং নেবেন, তত দ্রুত আয় বাড়বে।
ধরুন একজন ক্লায়েন্ট লিখছে—
“Our website is slow and needs optimization.”
যদি আপনি লেখেন—
“Sir, I can do this job.”
তবে আপনি ৯০% ক্ষেত্রে বাদ।
যদি লেখেন—
“আমি আপনার ওয়েবসাইট দেখেছি (URL)। আপনার হোমপেজে ইমেজ কমপ্রেশন নেই, cache সঠিকভাবে সেট হয়নি, এবং CSS/JS minify হয়নি বলে লোডিং টাইম বেড়েছে। আমি এগুলো ঠিক করতে পারি এবং ২–৩ সেকেন্ডের মধ্যে লোড টাইম নামিয়ে আনতে পারব।”
এইভাবে ক্লায়েন্ট বুঝে—আপনি সমস্যাটা জানেন।
অটোমেটিক্যালি আপনাকে বেছে নেয়।
বাংলাদেশের যে ডেভেলপাররা প্রতি মাসে ১–৩ লাখ আয় করে, তাদের মধ্যে তিনটি জিনিস সাধারণত দেখা যায়—
১. প্রতিদিন কোড করে
৫০ লাইন হলেও।
কারণ কোড করলে স্কিল ধারালো থাকে।
২. ভালো কমিউনিকেশন
শুধু ইংরেজি বলতে জানা নয়—
স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে বলা শেখা জরুরি।
৩. ক্লায়েন্টকে “সার্ভিস” দেয়, “ডেলিভারি” নয়
অনেকে শুধু কাজ শেষ করে ফাইল পাঠিয়ে দেয়।
কিন্তু সফলরা কাজ শেষ হওয়ার পরও গাইড দেয়, সাপোর্ট দেয়।
ক্লায়েন্ট আবার তাদেরই খোঁজে।
এখনকার ডেভেলপাররা দুইটি দিক ধরে—
এখানে WordPress, ডিজাইন, ছোট ওয়েবসাইট—চাহিদা বেশি।
ডেলিভারি দ্রুত, কম চাপ, কম রিকোয়ারমেন্ট।
Upwork, Fiverr, Toptal, Flexjobs (রিমোট জব)—
এখানে আয়ের পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি।
দুটো পথে একসাথে হাঁটলে আয় দাঁড়ায়—
৫০,০০০ থেকে কয়েক লাখ পর্যন্ত।
এটি এমন একটি রোডম্যাপ যা যেকেউ ফলো করলে ১ বছরে ইনকাম করতে পারবে।
HTML, CSS, Responsive Design
১০টি ছোট প্রজেক্ট বানানো
Theme customization
Elementor
WooCommerce
২–৩টি Demo Site তৈরি
DOM, API basics
২–৩টি Interactive project
এই সময় Fiverr Gig তৈরি
GitHub + Live portfolio
Upwork profile + ২০–৩০টি proposal
২০,০০০ → ৫০,০০০ → ১ লাখ (সম্ভাব্য)
এটি কল্পনা নয়,
এটি বাস্তব সিচুয়েশন—
কারণ বাংলাদেশের শত শত ডেভেলপার এই পথেই সফল হয়েছে।
বাংলাদেশে অনলাইনে কিছু ফাঁদ আছে। যেমন—
• “১ মাসে ওয়েব ডেভেলপার বানিয়ে দেব”—এগুলো মিথ্যা
• Course কিনলেই আয় হবে—এটাও ভুল
• Fake agency—অ্যাডভান্স টাকা নিয়ে কাজ দেয় না
শেখার কোনো শর্টকাট নেই।
দক্ষতা তৈরি করতে সময় লাগে, পরিশ্রম লাগে, কিন্তু ফলাফল নিশ্চিত।
আগামী ৫–১০ বছরে বাংলাদেশে যে স্কিলগুলোর চাহিদা দ্রুত বাড়বে, তার মধ্যে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অন্যতম।
স্টার্টআপ, ই-কমার্স, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, সরকারি প্রকল্প—সকলেই অনলাইন হচ্ছে।
এর মানে—
ডেভেলপারদের দরকার আরও বেশি, অনেক বেশি।
একটি জায়গায় স্কিল শিখে গেলে ভবিষ্যতে আর পিছনে তাকাতে হয় না।
আপনি WordPress জানলে পরে Shopify, React, Vue—সব শিখতে পারবেন।
একটি স্কিল আরেকটি স্কিলকে সহজ করে দেয়।
দুনিয়া বদলাচ্ছে।
চাকরির বাজার বদলাচ্ছে।
অনলাইন মার্কেট আকাশছোঁয়া।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট আয় এখন শুধু ক্যারিয়ার নয়—
বরং নিজের জীবন বদলের সুযোগ।
আপনি যদি সত্যি কিছু করতে চান—আজই শুরু করুন।
৫০০–৮০০ টাকা বাজেটের মধ্যে ডোমেইন–হোস্টিং কিনে Demo Website বানান।
প্রতিদিন ১–২ ঘণ্টা কোড করুন।
ধৈর্য ধরুন।
তাহলে ইনশাআল্লাহ আমিও দেখতে পাবো—আপনি ৬ মাস পর Fiverr-এ রিভিউ পাচ্ছেন, Upwork-এ ক্লায়েন্ট আপনাকে খুঁজছে, আর আপনার আয়ে পরিবার বদলে যাচ্ছে।
শেখার জন্য আরও গাইড, স্কিল ডেভেলপমেন্ট আর অনলাইন ইনকাম বিষয়ক আর্টিকেল পড়তে পারেন, অথবা
এই ওয়েবসাইটেই পরবর্তী গাইড দেখুন।
ডিজিটাল প্রোডাক্ট মার্কেটপ্লেস: বাংলাদেশে অনলাইন আয়ের নতুন যুগ
© 2013 - 2025 webnewsdesign.com. All Rights Reserved.